Syed Ali Ashraf

সৈয়দ আলী আশরাফঃ বহুমাত্রিক গুণে মর্যাদাবান একজন কবি ও গদ্যশিল্পী

“সাহিত্য বলতে আমরা গল্প, উপন্যাস, কবিতা এবং নাটককে বুঝি। এই চার শ্রেণীর লেখা মূলত কাল্পনিক। অর্থাৎ সাহিত্যের ভিতরে ঐতিহাসিক তথ্যের সন্ধান করা ভুল। সাহিত্যিক জীবন সম্বন্ধে যে সত্য উপলব্ধি করেন তাকে রূপায়িত করার জন্য কল্পনার সাহায্য নেন। তিনি অনুভ‚তি জাগ্রত করার মাধ্যমে তার উপলব্ধিলব্ধ সত্যকে পাঠকের মনে নতুন করে দোলা দিতে চান। তনি যে মানব সমাজকে জানেন এবং যে প্রকৃতির সঙ্গে তিনি পরিচিত তার থেকে চিত্রকল্প আহরণ করে নতুন রূপকল্পের সৃষ্টি করেন।”


“সাহিত্য ও মূল্যবোধ” শিরোনামে প্রবন্ধের শুরুতে অধ্যাপক কবি সৈয়দ আলী আশরাফ উপরে উল্লিখিত কথাগুলো বলে মূল প্রবন্ধের আলোচনা শুরু করেছেন। তিনি উক্ত প্রবন্ধে আরও বলেনঃ
“সেই জন্য বলতে পারি সাহিত্য জ্ঞানের একটি শাখা। ধর্ম আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সত্যিকারের জ্ঞান মানুষ আল্লাহর তরফ থেকে পায়। তাকেই অহীলব্ধ জ্ঞান বলে। ইসলামে বলা হয় যে, এই জ্ঞানের চরম এবং সম্পূর্ণ রূপ মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা:) এর মাধ্যমে কোরআন হিসেবে আল্লাহ দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। অন্য সমস্ত জ্ঞানই মানুষের সচেষ্ট প্রয়াসের মাধ্যমে অর্জিত হয়।”


সৈয়দ আলী আশরাফ বহুমাত্রিক গুণে মর্যাদাবান একজন কবি ও গদ্যশিল্পী। তার কবিতা, কাব্য বিবেচনা, চিন্তার মৌলিকতা বাংলা ভাষার গৌরবীয় সম্পদ।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী আশরাফ The islamic Academy, Cambridge এর মহা পরিচালক এবং বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য ছিলেন। তিনি ১৯২৫ সালে ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের বর্তমান রাজধানী ঢাকায় জন্ম গ্রহণ করেন। আর ১৯৯৮ সালে ৭ আগস্ট, শুক্রবার সকালে কেমব্রিজে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন।


ঢাকা শহরে তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতকোত্তর শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন। তিনি ফিটজউইলিয়াম কলেজ (Fitzwilliom, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান) থেকে অনার্স এবং পিএচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী সাহিত্য বিভাগের প্রভাষক (Lecturer) হিসেবে অধ্যাপনা শুরু করেন, ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী সাহিত্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি বিদেশে OIC বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্ব পালন করেন।


অধ্যাপক সৈয়দআলী আশরাফ তার ব্যক্তি জীবন ও আদর্শ বোধ উভয় ক্ষেত্রেই ইসলামী চেতনাকে গভীরভাবে অনুধাবন করেছিলেন এবং আমৃত্যু সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। বৈশ্বিক ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্জাগরণে তার অসামান্য মৌলিক অবদান পুরো পৃথিবী ব্যাপী শিক্ষা ব্যবস্থা ইসলামি করণ আন্দোলনে ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল, তা পরবর্তীতে ইসলামি শিক্ষা দর্শণের বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় বৈশ্বিক প্রভাব ফেলেছিল।


অধ্যাপক সৈয়দ আলী আশরাফ একজন সাহিত্য সমালোচক এবং কবি ও ছিলেন, তিনি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় লিখতেন। কবি সৈয়দ আলী আশরাফ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবু রুশদ বলেন:
“সৈয়দ আলী আশরাফ এক বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের কৃতি ছাত্র ও শিক্ষক, দেশি বিদেশি সাহিত্য তার স্বচ্ছন্দ পদচারণা, ব্যক্তিগত প্রেসের অভিজ্ঞতা থেকেও তিনি গচ্ছিত নন, তিনি জীবনের অসংশোধনীয় অযৌক্তিকতা ও ক্ষণভঙ্গুরতার মধ্য দিয়ে এক দুর্লভ অভিজ্ঞতার দ্ব›দ্ব বিক্ষুব্ধ সন্ধানী এবং সর্বশেষে তিনি কিছুটা মরমী ধরনের আধ্যাত্মবাদের ও নিজের ধর্মের নিগূঢ় আশ্রয়সন্ধানী। তাই তার কবিতায় দেখতে চাই:- তার বিখ্যাত কাব্য গ্রন্থ ‘রূবাইয়াতে জহীনি’ লিখেন:
“আকাশের আলো অনাবিল জানি, সন্দী এই বসুন্ধরা,
এই তনু মন অযাচিত দান, এই কুহু স্বর মধুক্ষরা,
তবু দিল তুমি সাহারা করেছ- ধূ ধূ করে বালু তৃপ্তিহীন
এ কি তোমার রাজ্জাকী খোদা?সাখাওয়াতী কই তৃষ্ণাহরা?


সৈয়দ আলী আশরাফের কবিতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ১৯৯১ সালে ড. রাজিয়া সুলতানা বলেন:
“বাংলা সাহিত্যে দার্শনিক কবিতার জগতে সৈয়দ আলী আশরাফ একটি অসাধারণ নাম। তার কবি ব্যক্তিত্ব কোন বিশেষণে সীমায়িত হবার নয়। তিনিই প্রথম কবি, যাকে কবিতার বক্তব্য এবং আঙ্গিকের মধ্যদিয়ে যুগান্তর প্রতিভা বলে চেনা যায়। তার বক্তব্যে যে স্বকীয়তা ও শৈলী রয়েছে তাতে তিনি বাংলাদেশের বিশিষ্ট স্বাতন্ত্র চিহ্নিত জাতীয় সঙ্কট ত্রাণের প্রতিভ‚ বলে পাঠ-পাঠিকার হৃদয়ে বৃত্ত হবার স্পর্ধা রাখেন।”


সৈয়দ আলী আশরাফের কবিতায় প্রেম, ভালবাসা, দুনিয়া, মানুষ একাকার হয়ে আছে। তার লেখনিতে প্রেমের যে ঝংকার তা আমাদের সব সময় পুলকিত করে। কবির ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে-
“যে প্রেম বায়ুর বেগে ভুলে যায় পথের ঠিকানা,
পালকের মত ক্ষীণ, ভ্রষ্টনীড়, অধীর, চপল,
সেই প্রেম প্রেম নয়- মোহমত্ত দেহের কামনা,
যৌবনের তারে তারে মিহিসুর ক্ষণিত সম্বল।
সেই প্রেম দৃঢ়মূল, ঝড়ে তবু নতশির যার,
শাখায় শাখায় শুধু হাহাকার আকুলি জাগায়,
সে প্রেম সীমায় বন্দী বসন্তের অনন্ত বাহার,
তবু সে গোস্পদে বৃথা আকাশের অসীমতা চায়।
খাঁটি প্রেম মাটি যেন, সহ্য তার কঠিন পীড়ন,
তবু সে সপ্তর্ষি, নিত্য ধ্রæবতারা প্রদক্ষিণ করে,
পর্বতের মত তার ইমানের অনড় গড়ন,
অবিচল আকাশের অবিকল প্রতিকায়া ধরে।
এই প্রেম অন্ধরাত্রে নুরানীর অনির্বাণ শিখা
রূহের আকাশ পথে যোগ করে দেহের মৃত্তিকা।”


১৯৯৭ সালে কবি সৈয়দ আলী আশরাফ স্মরণে কবি ইশারফ হোসেন এর সম্পাদনা একটি পত্রিকা সকাল প্রকাশিত হয়। উক্ত পত্রিকা উত্তর আধুনিক সাহিত্য আন্দোলনের মূখপাত্র হিসাবে তখন বেশ জনপ্রিয় ছিল। ঐ সংখ্যায় ইশারফ হোসেন সৈয়দ আলী আশরাফ এর এক দীর্ঘ সাক্ষাতকার গ্রহণ করে প্রকাশ করেন। তাতে কবি এক প্রশ্নে কবিতা সম্পর্কে বলেন,
সাম্প্রতিক বলতে যদি গত ত্রিশ বছরের কথা বলো তাহলে দুটো ধারা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। একটি হচ্ছে বিশ্বাসহীন, ধর্মহীন। সুতরাং নিজস্ব কষ্টির মূল মানদন্ড সম্বন্ধে আস্থাহীন নতুন মানবতা সন্ধানী এক ধরনের কবিতা আর দ্বিতীয়টি ধর্মের মূলগত যে আধ্যাত্মিক সেই উপলব্ধিভিত্তিক মানবতার চিরন্তন মানদন্ডকে নতুনভাবে সাহিত্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা। অমিয় চক্রবর্তী যেমন অত্যাধুনিক হয়েও বিশ্বাস সচেতন আমিও তেমনি আধুনিক বিভ্রম এবং বিভ্রান্তিক জানার জন্যই ধর্মের আধ্যাত্মিক উপলব্ধিকে একান্তভাবে প্রয়োজনীয় মনে করি। আমার কবিতায় তুমি তারই স্বাক্ষর দেখতে পাবে।”
সৈয়দ আলী আশরাফ তার সেই চিন্তা যেমন চরিত্র, কাব্যে, গদ্যে, প্রকাশ করেছেন তার নতুনা নাচের কবিতাংশে দেখি:
“এ জীবনে বন্দী হয়ে থেকে
রূহানীর নূরানীকে ভুলে,
রূহানীর দীপ্তি চোখে এলে
এ জীবন দেখেছি নূরানী।
রূহানী অজ্ঞ দীপ্তি প্রেমিতে ভাস্বর
সেই প্রেম দীপ্ত চোখে মৃত্যুই নশ্বর।
পেরিয়ে সমুদ্র মরুবালুর পাহাড়
পূত মদিনায় তাই এসেছি এবার।”


সৈয়দ আলী আশরাফ শুধু কবিতা, গদ্য, অনুবাদ, ভ্রমণ বিষয় লেখেননি, লিখেছে অগণিত ইংরেজী প্রবন্ধ। যা দেশে বিদেশে প্রকাশিত হয়েছে। লেখকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ হচ্ছে; কবিতা: চৈত্র যখন (১৯৫৭), বিসংগতি (১৯৭৪), হিজরত (১৯৮৪), রূবাইয়াতে জহীনি (১৯৯১), অনুবাদ: ইভানকে ক্লেয়ারগল (১৯৬০), প্রবন্ধ: কাব্যপরিচয় (১৯৫৭), নজরুল জীবনে প্রেমের এক অধ্যায় (১৯৯৫), বাংলা সাহিত্যে মুসলিম ঐতিহ্য, অন্বেষা। ইংরেজীতে: Ed. The other Harmony,Muslim Tradition in Bengali Literature (1982), Literature, Society and Culture 1947-1972, Muslim Education: Aims and Objectives of Islamic Education: Curriculum and teacher Education-etc.
সৈয়দ আলী আশরাফ একজন সার্থক সাহিত্য সমালোচক ছিলেন। বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিকে নিয়ে তার বহু প্রবন্ধ নিবন্ধ রয়েছে। স্বার্থক সমালোচক হিসাবে তিনি বাংলা সাহিত্যে বড় আসন লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন। ‘আধুনিক বাংলা কাব্যে সমাজ সচেতনতা’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে সৈয়দ আলী আশরাফ বলেন:
একজন তরুণ লেখক স্বীকার করেছেন রবীন্দ্রনাথ ‘হিন্দু’ বলেই নিজেকে পরিচয় দিতেন এবং হিন্দু ঐহিত্যের ভিতরেই বহুকিছুর সন্ধ্যান পেয়েছেনÑহিন্দু এবং মুসলিম ঐতিহ্যকে মিল করার ব্যর্থ প্রয়াস করেননি। নজরুল সেই চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সার্থক হননি। অপূর্ব সুন্দর ভাষায় তিনি কালী বন্দনা ও রচনা করেছেন আবার রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়া সাল্লামের উপর অপরূপ কবিতা এবং ‘নাত’ লিখেছেন। কিন্তু এ দুই দুই-ই থেকেছে। এ দুইকে এক করতে পেরেছেন (এবং সে ব্যাপারে তার সার্থকতা প্রশংসনীয়) যখন তিনি তার নিজস্ব জীবনবোধ বা বিদ্রোহ বা প্রেমকে রূপায়িত করতে চেয়েছেন। ‘খোদার আসন আরশ’ এবং ‘পরশুরামের পরশ কুঠার’ একই কবিতায় স্থান পেয়েছে। এ কবিতায় তিনি হিন্দু বা মুসলিম জীবনবোধ ফুটিয়ে তুলতে চাননি, তার প্রেমের অভাবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকে পরিস্ফুট করতে চেয়েছেন। কিন্তু যখনই তিনি এমন কোন ভাষা ব্যবহার করেছেন যে ভাষা হিন্দু ঐতিহ্যকে জাগ্রত করে এবং মুসলিম ভাবধারার বিরোধী সেখানে হিন্দু মুসলিম ভাবধারা মিলাতে তিনি সার্থক হননি।


‘সৈয়দ আলী আশরাফের কবিতা ও কবি মানস’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে বিশিষ্ট সাহিত্যিক, গবেষক মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ বলেন:
“কাব্যের ভাব বা বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে সৈয়দ আলী আশরাফের রচনায় বৈচিত্র্য ও ব্যাপ্তি তার পরিচয় দিতে গেলে উল্লেখ করতে হয় যে, প্রেম, প্রকৃতি, স্বদেশের পটভূমি ও পরিবেশ, ব্যক্তিগত সুখ-দু:খ অনুভ‚তি, আত্ম-অন্বেষণ ও আবিষ্কার, মানবিক মূল্যবোধ, অবক্ষয়ের বেদনা, বিষাদ ও বিসঙ্গতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য চেতনা, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বোধ এবং চিন্তা-চেতনা, সংস্কৃতিক ধ্যান-ধারণা, মনন-চিন্তন, প্রজ্ঞা ও আধুনিক জীবনবোধ তার কবিতায় ব্যঙ্গময়।”

তিনি সৈয়দ আলী আশরাফ সম্পর্কে একই প্রবন্ধে আরও বলেন:
“বস্তুত: ঐতিহ্যবোধ ও প্রেরণাগত দিক ছাড়া, নজরুলের সঙ্গে সৈয়দ আলী আশরাফের কাব্যগত সম্পর্ক অত্যন্ত ক্ষীণ এবং কিছু আরবী ফারসী শব্দ ব্যবহারের মধ্যেই একরূপ সীমাবদ্ধ। বরং ফররুখ আহমদের সঙ্গেই তার মানস সার্যজ্য বেশী। যদিও তিনি ফররুখ আহমদের মতো বলিষ্ঠ ও সোচ্চার কন্ঠ নন, হয়তো বা কাব্যে তেমন মিশনারীও নন।”

মূলত সৈয়দ আলী আশরাফ একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক ও সৃষ্টিশীল মানুষ ছিলেন। জীবন ও চরিত্রে ইসলামের মৌলিক বিষয় সমূহকে ধারণ করে জীবন কাটিয়েছেন। তিনি একজন স্বার্থক সুফী। সুফী জীবনের মৌলিক চরিত্র সমূহ তার জীবন চরিত্রে সুন্দরভাবে চর্চা করার চেষ্টা করেছেন। ইসলামী শিক্ষা তথা শিক্ষাকে কিভাবে ইসলামের আদলে ঢেলে সাজানো যায় তার জন্য তিনি দীর্ঘ জীবন সাধনা করেছেন, গবেষণা করেছেন, লিখেছেন এবং বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টাও করেছেন। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দলনের শিক্ষাকে বাস্তবরূপ দেয়ার জন্য তিনি ঢাকায় দারুল এহেসান বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন।


অধ্যাপক ড. আলী আশরাফ ছিলেন বুদ্ধি বৃত্তিক চিন্তাশীল এবং অধ্যাত্মিক দূরদৃষ্টি সম্পন্ন অক্লান্ত পরিশ্রমী একজন মানুষ। এরপরও সাদা মাটা জীবন ছিল তার পছন্দ। তিনি ছিলেন প্রকৃত বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক; যে বিশ্বাস জ্ঞান ও ভালবাসায় লালিত। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুহৃদয়বান ও স্নেহময়। তিনি দয়া ও সহমর্মিতায় ছিলেন সিক্ত, সব সময় সাধ্যমত অন্যকে সহযোগীতা করতেন। তিনি ছিলেন একজন মহান শিক্ষক, একজন ভাল বন্ধু এবং একজন বিচক্ষণ পরামর্শ দাতা, একজন প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবে ইসলামের বাণী প্রচারে দেশে দেশান্তরে জীবন কাটিয়েছেন।
সৈয়দ আলী আশরাফ সম্পর্কে খুবই সংক্ষেপে মাহমুদ শাহ কোরেশী বলেন “সমগ্র বিশ্বে ইসলামি শিক্ষা পদ্ধতির অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলো উপলব্ধি করানোর কাজটি ছিল তার জীবন সাধনা। অথচ তিনি ছিলেন আধুনিক ইংরেজী কবিতার অন্যতম রসগ্রাহী সমালোচক ও সাহিত্যের সমাজতত্ত¡ বিষয়ে একজন প্রাথমিক গবেষক।”

Abul Quasem Haider
আবুল কাসেম হায়দার

সাবেক সহ সভাপতি এফবিসিসিআই, বিটিএমইএ, বিজিএমইএ , বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি, প্রতিষ্ঠতা চেয়ারম্যান ইস্টার্ন ইউনির্ভাসিটি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি:, অষ্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম, সাবেক সিনেট সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

তিনি আজীবন সদস্য : এশিয়াটিক সোসাইটী বাংলাদেশ, বাংলা একাডেমী, চট্টগ্রাম সমিতি, সন্দ্বীপ সমিতি ঢাকা ।

লেখক দৈনিক আজকের আওয়াজ ও সাপ্তাহিক প্যানোরামা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

3.5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments