“মাটি, মানুষ আর ভাষা
পাখি, নদী, নৌকা আর ধানকাউনের ভালোবাসা
এই নিয়ে এক দেশ
ছায়া মায়া আর মমতায় মাখা এক দেশ
বাংলাদেশ। গঙ্গারিড্ডি থেকে বাংলাদেশ
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, সুরমা, কর্ণফুলী আর হাজার স্রোতের পলিমোহনা বাংলাদেশ লালমাটি, এঁটেল মাটি, দোঁয়াশমাটি আর গিরিমাটির শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশ।
পুন্ড্রনগর থেকে দরিয়ানগর -রক্তাপ্লুত বিবর্তিত, প্রমুক্ত বাংলাদেশ
স্বর্গাদিগি গরিয়সী এই দেশ
স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ।”
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার লেখা ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর ‘বিজয়ী বাঙালি’ কবিতার প্রথম কয়েকটি লাইন উপরে উল্লেখিত হলো। আমাদের সময়ের বহুমাত্রিক আলোক মানুষ কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম শীর্ষ কণ্ঠস্বর এই কবির কাব্য প্রয়াসের কেন্দ্রে রয়েছে ব্যক্তিমানুষ, জাতিমানুষ ও বিশ্ব মানুষের সমীকৃত প্রতীতি। জাতিসত্তার কবিরূপে বহুলনন্দিত তিনি দৈশিক ও বৈশ্বিক মানব অস্তিত্বের নান্দনিক ভাষ্যকর।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা জন্ম কক্সবাজার জেলায় পোকখালী গ্রামে ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ সালেজন্ম গ্রহন করেন। পিতা মোহাম্মদ সেকান্দর মাতা আঞ্জুমান আরা বেগম। ১৯৬৫ সালে ঈদগাঁও হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তির্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ ১৯৭২ সালে এম এ পাশ করেন। বর্তমানে ১২ জুলাই ২০২১ সাল থেকে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সফল মানুষ সফল । সফল তার দীর্ঘ কর্মময় জীবন। কবিতার জগতে তিনি একজন প্রাণ পুরুষ এবং সকলের খুবই প্রিয় ব্যক্তিত্ব।
তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা কবি। কবিতায় তার জীবন। তবে কথা সাহিত্য মননশীল প্রবন্ধ, অনুবাদসহ সাহিত্যের সব শাখায় তার বিচরণ। দীর্ঘ জীবন শুধু লিখে যাচ্ছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। কবি নূরুল হুদার প্রিয় ক্ষেত্র কবিতা, নন্দনতত্ত¡ ও লোকবিদ্যা। কবি নূরুল হুদার সঙ্গে আমার পরিচয় খুব বেশি দিনের নয়। তবে ইতিমধ্যে অনেক বছর গড়িয়েছে। আমার ছোট একটি সৃজনশীল প্রকাশনী রয়েছে। নাম ‘লেখালেখি’ ২০০৮ সাল থেকে ‘লেখালেখি’র যাত্রা শুরু। ছাত্রজীবন থেকে আমার লেখার কিছু অভ্যাস ছিল। কর্মজীবনের ব্যস্ততায় লেখা অনেক দিন চলেনি। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গিয়ে আবার লেখার অভ্যাস ঘুরে দাঁড়ায়। ‘সাপ্তাহিক প্যানোরমা’ ও ‘দৈনিক আজকের আওয়াজ’ নামেআমার দুইটি পত্রিকা অনেক দিন থেকে সম্পাদনা করছি। মাঝে মাঝে ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা নিয়ে লিখি। কিছু লেখা পত্রিকায় ছাপাও হচ্ছে। গ্রন্থ আকারে আমার বইও প্রকাশিত হয়েছে। সম্পাদনা ও লেখাসহ প্রায় চল্লিশের অধিক আমার বই প্রকাশিত। বাংলা একাডেমিসহ বহু নামি-দামি প্রকাশনী আমার বই প্রকাশ করেছে।
কখন কীভাবে হুদা ভাইর সঙ্গে আমার পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা ভুলে গিয়েছি। তবে আমার প্রকাশনীর শুরুতে তার একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে বেশ ভালো জেনেছি কবি সম্পর্কে। ২০০৯ সালে অমর একুশে বই মেলায় নূরুল হুদা ভাইয়ের বিশাল একটি বই প্রকাশ করলাম। নাম ‘ষাট বছরের কবিতা’।
‘ষাট বছরের কবিতা’ গ্রন্থের ভ‚মিকায় কবি নিজের ভাষায় বলেন-
‘২০০৯ সাল পর্যন্ত গ্রন্থাকারে প্রকাশিত আমার প্রায় সব কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হলো ‘ষাট বছরের কবিতা।’ এটি আমার জীবনের এক আনন্দঘন মুহূর্ত। শিশু-কিশোর কাব্য ও আরো কিছু অগ্রন্থিত কবিতা এই সংকলনের বাইরে থেকে গেলো। সেগুলো নিয়ে আলাদা সংকলন প্রকাশের পরিকল্পনা আছে।’
তিনি আরও বলেন:
‘এ কথা সত্য যে, এ পর্যন্ত যাপিত জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আমি খাতা কলমে কবিতা লিখিনি, লেখা সম্ভবও নয়। অন্তত কবিতা যে অর্থে টেক্সট, সে অর্থে আমার প্রতিটি মুহূর্তের চেতনাকে আমি শব্দে, চিত্রে, উৎপ্রেক্ষায়, রূপকল্পে বা অন্যবিধ সৃষ্টিশীল অভিব্যক্তিতে উপস্থাপন করতে পারিনি। তবে সৃষ্টিশীলতা আমার কাছে এক অবিচ্ছিন্ন সার্বক্ষণিকতা। এই সার্বক্ষণিক পরিব্যাপ্ত স্রষ্টার অচেতন ও অবচেতন স্তরে। এই দুই স্তর পরস্পর অর্ন্তপ্রবিষ্ট, অর্ন্তবয়িত।’
‘ষাট বছরের কবিতা’ গ্রন্থটি বিশাল। ১১৩৯ পৃষ্ঠায় লিখিত কবি জীবনের সকল কবিতায় এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। চমৎকার ছাপা, বাঁধাই ও অঙ্গ সজ্জায় এক অপূর্ব ঐতিহাসিক দলিল গ্রন্থের মতো কবিতার বইটি। যখন বইটি ছাপানোর প্রস্তাব আমাকে কবি নূরুল হুদা দেন, তখন আমি বুঝতে পারিনি কত বড় বই হবে, কত খরচ হবে। বই সংখ্যা ছাপানো হয়েছিল প্রায় পাঁচ শত কপি। খরচও হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। তবে শেষে প্রিন্টার্স ঠিক মতো, পুরো কপি বুঝে দিতে পারেনি। ২০০৯ সালে মেলায় বেশ চেষ্টা হয়েছে বইটি বিক্রির জন্য। মূল্য বেশি হওয়াতে ক্রেতার চাহিদা বেশ কম ছিল। কবিও চেষ্টা করেছেন বইটি বিক্রি করে আমার গুদাম খালি করতে। তাই আজও বেশ কয়েশত বই গুদামে রক্ষিত আছে। আশা করি সামনের বর্ষগুলোতে সব কয়টি সংখ্যা পাঠকের হাতে পৌঁছে যাবে। পাঠক উপকৃত হবে। পাঠক পড়ে আনন্দিত হবে। অনেক অজানা জিনিস জানতে পারবে।
সত্তর দশকের একজন প্রথিতযশা কবি। তিনি আমাদের সাহিত্য অঙ্গনে ‘জাতিসত্তার কবি’ হিসেবে পরিচিত। তিনি শুধু একজন কবি নন, সঙ্গে সঙ্গে তিনি একজন ঔপন্যাসিক ও সাহিত্য সমালোচক। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পঞ্চাশের অধিক। ১৯৮৮ সালে বাংলা কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০১৫ সালে তিনি একুশে পদকও অর্জন করেন। এছাড়াও বহু দেশি- বিদেশি পদকে তিনি ভ‚ষিত হয়েছেন।
কবি নূরুল হুদার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে : জনমজাতি (১৯৯৪), মৈনপাহাড় (১৯৯৫), ব্যাঙ কুমার, চাঁদের বুড়ো চাঁদের বাড়ি, ছোটদের বেগম রোকেয়া, রাজার পোশাক, রবীন্দ্র প্রকৃতি ও অন্যান্য, আমরা তামাটে জাতি, তেলাপোকা, স্বাধীন জাতির স্বাধীন পিতা, আমি ও রোহিঙ্গা শিশু, হাজার নদীর দেশে কবিতার কৌশল, দুটি লাল পাখি ও সব্যসাচী প্রভৃতি।
নূরুল হুদার জীবনে কবিতায় সব। কবিতাকে তিনি তার জীবনের প্রধান বিষয় হিসেবে নিয়েছেন। জাতিসত্তার কবি হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। তিনি চিন্তা করছেন এবং অতীতের ইতিহাস নিযে তার কবিতা। ‘আমরা তামাটে জাতি’ শীর্ষক কাব্য গ্রন্থের কবিতায় কবি তার স্বকীয়তাকে তুলে ধরেছেন।
‘রোদ্দুর নেয়েছি আর বৃষ্টিতে বেড়েছি
সহস্র শতাব্দী দিয়ে নিজেকে গড়েছি
আমরা তামাটে জাতি, আমরা এসেছি।
আগমনী স্মৃতি হয়ে লেগে আছে আঠালো জীবন
আমাদের জন্মলগ্ন জাতিস্মর পায়
যৌবন ঘুঙুর হয়ে যায় বেজে যায়
ব্রহ্মাণ্ডের মতো এক স্বয়ম্ভুর স্বপন-
সব স্মৃতি সব ধ্বনি একসঙ্গে পুষেছি
আমরা তামাটে জাতি, আমরা এসেছি।’
কবি নূরুল হুদা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একজন সৃজনশীল ভক্ত। তার কবিতায়, লেখা বিশ্লেষণে কবিগুরুর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার নানা নমুনা আমরা দেখতে পেয়েছি। ৩০ চৈত্র, বাংলা ১৩৯৯ সালে কবি জোড়া সাঁকোর ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় বসে যে কবিতা লেখেন তাই আমাদের নিকট অতিব ভালো উদাহরণ।
কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘দিগন্তের খোসা ভেঙে’ দ্বিতীয় কবিতা ‘কবিতাই সত্যাসত্য’ শিরোনামে বলেন:
ওইপাশে বসেছে ভুসুকু
এই পাশে দুখু
বারান্দায় চন্ডীদাস আর মাইকেল
শতাব্দীর শেষ চৈত্র
ঠাকুরের আঙিনায়
কবির মাইফেল।
শতবর্ষ পরে নয়
নয় আরো আগে
অনন্ত অনঙ্গ বঙ্গে
আজ শুধু
কবিরাই জাগে।
আজ বঙ্গ কবি-বঙ্গ,
আজ বঙ্গ রবি-বঙ্গ,
যে যেখানে থাকো-
খুলে ধরো বই-বঙ্গ,
আঁকো জোড়াসাঁকো।
কাল মেশে কালে আর
মন মেশে মনে,
জগতের যত কবি
আজ রবি সনে।
ভুবন ভ্রমণ শেষে
চির- বিরহিণীবেশে
ওকাম্পোর অশ্রু হয়
কবির হৃদয়-
মিলন-বিরহ সত্য, কবিতাই সত্যাসত্য
জয় হোক, কবিতার জয়।’
কবি নূরুল হুদার গদ্য সাহিত্যেও ভালো দখল রয়েছে। তিনি নানা বিষয় গদ্য রচনা লেখেন। তাও বেশ উঁচু সাহিত্যের পরিচয় বহন করে। ভাষা, শব্দ, বাক্য রচনায় তিনি বেশ মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। তার লেখা ‘আত্মপক্ষ’ প্রবন্ধে লেখক বলেন:
‘সুবিশাল এই বঙ্গজনপদ। সেই থেকে বহুবার আমি তার দেখা পেয়েছি এই জনপদে। কিন্তু সাহস পাইনি স্পর্শ করার। বার বার দুরু দুরু কেঁপে উঠেছে আমার বাঙালি বুক। আমি শুধু আমার ভিরুতা দিয়ে তাকে ধারণ করেছি আমার শব্দে, সাধ্যমতো আমার চিত্রে বা উপমায়। আজ যৌবনের মধ্যগগনে এসে দেখি, সে আমার অশরীরী নয়। পরাজিত হচ্ছি, বার বার পরাজিত হচ্ছি তার পেশল আলিঙ্গনে। আমার দ্রাবিড়া আজ আগুনে গড়া এক মোহান্ধ মৃন্ময়ী।’
তিনি আরও বলেন:
‘আমি বিশ্বাস করি, মিলনই সত্য, মিলনই ধ্রুব। আমি বিশ্বাস করি, একদিন ধসে পড়বে সব বাধার দেওয়াল। আমি বিশ্বাস করি, মুনি দুর্বাসার অভিশাপ ও কালের ধোপে একদিন ভ্রান্ত প্রমাণিত হবে। আমি বিশ্বাস করি, অজস্র তামাটে মানুষের উত্থানে একদিন খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে বাধসাধকারী তৃতীয় পক্ষ। আমি বিশ্বাস করি, একদিন বিভেদ থাকবে না মানুষে-মানুষে, ব্যবধান থাকবে না শ্রেণিতে শ্রেণিতে। আমি বিশ্বাস করি, মানবতা একদিন সম-স্বার্থে সমুত্থিত হবেই। ’
‘আত্মপক্ষ’ রচনাটি কবি নূরুল হুদা ১৯৮৪ সালে কোনো এক সময় লিখেছিলেন। তা ছিল তার একটি স্বীকারোক্তিমূলক রচনা। কবি নূরুল হুদা সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে, কবির সৃষ্টি ২০০৯ সালে প্রকাশিত ‘ষাট বছরের কবিতা’ গ্রন্থের আলোচনা না করে কোনো উপায় নেই। উক্ত গ্রন্থে কবির ষাট বছরের যত অর্জন, সৃষ্টি একটি বইতে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। তার মূল্যবান বয়সের সকল কবিতা উক্ত গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। অপূর্ব, অসাধারণ, বিশাল এই প্রকাশনা।
উক্ত গ্রন্থের ‘প্রবেশক’ শীর্ষক লেখায় কবি অতি সহজ সরল ভাষায় বলেন:
‘আমি বরাবরই খণ্ড কবিতার পাশাপাশি দীর্ঘ কবিতা লিখে এসেছে। বিভিন্ন বিশ্বভাষার কিছু প্রচলিত শব্দের পাশাপাশি আমার লোকভাষার শব্দ, এমনকি স্বোদ্ভাবিত নতুন শব্দ প্রয়োগ করেছি। প্রকরণ ও বিষয়ের ক্ষেত্রেও ঘুরে বেড়িয়েছি মাটি ও আকাশের নানা তেপান্তর। তবে দাঁড়িয়ে তো আছি আমার ভ‚মিতে, আমার কালে, আমার ব্যক্তিক সীমান্তে। এই বাংলা, এই বাংলাদেশ, এই বাঙালি জাতিই আমার মাটি ও আকাশ, আমার ঘর ও চরাচর, আমার চির নবায়নযোগ্য ঠিকানা, এই আমার গর্ব।’
উপরের কথাগুলো থেকে কবির পরিচয় আমরা পাই। আমরা আরও জানতে পারি কবি কি নিয়ে ভাবেন, কি নিয়ে লেখেন, কি নিয়ে নিজে সব সময় গর্ববোধ করেন। কবির জীবন মানুষ, কবির চিন্তা বাংলাদেশ, কবির কল্প দেশ ও মাতৃকার উন্নতি। এই কবির মনের একান্ত কামনা।
‘ষাট বছরের কবিতা’ গ্রন্থে কবির শ্রেষ্ঠ ৩৬টি কাব্য গ্রন্থ স্থান পেয়েছে। তার জীবনের ষাট বছরে লেখা কবিতাসমূহ উক্ত গ্রন্থে সুনিপুণভাবে স্থাপিত হয়েছে। কবিকে ও তার কবিতা জানতে হলে এই গ্রন্থটি সংগ্রহ করলে যথেষ্ট।
কবি অনুবাদ সাহিত্যে বেশ সময় ব্যয় করেছেন। বহু বিখ্যাত বিদেশি বিশেষ করে ইংরেজ কবির কবিতা তিনি বাংলায় রচনা করেছেন। উক্ত গ্রন্থের শেষে কবি ইয়েট্স দুইটি ছোট কবিতা আমাদের আকর্ষণ করে।
‘পান সঙ্গীত’ শিরোনামে কবি ইয়েট্স কবিতা অনুবাদ করেন:
মুখে সুরার পান পেয়ালা
চোখে প্রেমের বসবাস;
বুড়িয়ে গিয়ে মরার আগে
এই সত্য মানছি খাস;
মুখে তুলি পানপেয়ালা,
তোমাকে দেখি, ফেলি দীর্ঘশ্বাস।
উক্ত কবিতাটি মূল লেখা হয়, ১৯১০ সালে। কবি নূরুল হুদা অনুবাদ করেন ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে।
১৯১৬ সালে বিদেশে কবির আরও একটি কবিতা ‘যুদ্ধকালীন পঙক্তি’ শিরোনামে কবিতার অনুবাদ কবি নূরুল হুদা ২০০৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি অনুবাদ করেন। তা হচ্ছে:
“এমন সময় এলো যখন বরং ভালো
কবির মুখ বন্ধ রাখা, সত্য বলে নেই কিছু আর
রাজনীতিককে সবক দেওয়ার, সঠিক চলার;
তার তো জানা অনেকরকম ফন্দিফিকির
অনধিকার চর্চা করার, বিলাসিনী তরুণীকে তুষ্ট করার,
কিংবা চলো সেই বুড়োকে বাগে আনার
শীতের রাতে যার প্রয়োজন তাপ ও আলো।”
কবি নূরুল হুদার আর একটি বৈশিষ্ট্য ছিল যে, তিনি কোনো কোনো গ্রন্থের শুরুতে মহৎ কবিদের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছিলেন। যেমন ‘অগ্নিময়ী হে মৃন্ময়ী’ শীর্ষক কবিতার প্রারম্ভিক উদ্ধৃতিটি ছিল নিম্নরূপ:
Faust: The pain of life that haunts our narrow way
I can not shed with this or that attire.
Too old I am to be content with play,
Too young to live uncontrolled by desire.
What comfort can the shallow world bestow?
– Goethe
আবুল কাসেম হায়দার
সাবেক সহ সভাপতি এফবিসিসিআই, বিটিএমইএ, বিজিএমইএ , বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি, প্রতিষ্ঠতা চেয়ারম্যান ইস্টার্ন ইউনির্ভাসিটি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি:, অষ্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম, সাবেক সিনেট সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি আজীবন সদস্য : এশিয়াটিক সোসাইটী বাংলাদেশ, বাংলা একাডেমী, চট্টগ্রাম সমিতি, সন্দ্বীপ সমিতি ঢাকা ।
লেখক দৈনিক আজকের আওয়াজ ও সাপ্তাহিক প্যানোরামা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।