তারেক মাহমুদ
একটা সমাজকে সভ্য করতে প্রথমে দরকার শিক্ষা, শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দরকার সংস্কৃতি আর সংস্কৃতি আসে ইতিহাস থেকে। আর এর জন্য প্রয়োজন একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। এই সবকিছুর সঙ্গে অতপ্রোতভাবে সফলভাবে যে নামটি আসে তিনি আবুল কাসেম হায়দার।
আবুল কাসেম হায়দার একজন সুশিক্ষিত এবং সৎ ব্যবসায়ী। তিনি শিক্ষাব্রতি, সমাজসেবক, দেশপ্রেমিক, লেখক, গবেষক,সংস্কৃতিবান,ধর্মপরায়ন, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন অগ্রসর চিন্তাশীল দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে কম মানুষই আছেন যারা লেখালেখি করেন। কিন্তু আবুল কাসেম হায়দারকে দেখা যায় নিয়মিত পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করতে। শুধু তাই নয় নিয়মিত তার গ্রন্থও প্রকাশিত হয়। তার এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় অর্ধশতের কাছাকাছি। শিক্ষা-সংস্কৃতি-অর্থনীতি নিয়ে রয়েছে তার নিজস্ব চিন্তা ভাবনা। এসব নিয়ে তিনি কাজও করছেন।
মহান ভাষা আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয় যে বছর তার দুই বছর পর ১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন। এই বছরের ১লা এপ্রিল বানিজ্যিক এবং পর্যটন নগরী চট্টগ্রামের সবুজ ও সমুদ্রের মাঝে গড়ে ওঠা সন্দ্বীপে তাঁর জন্ম।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন প্রথম শ্রেণী পেয়ে। পরে পিএইচডি করেছেন আমেরিকার এডওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে।
যে সমস্ত ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি সাংগঠনিকভাবে যুক্ত ছিলেন এবং আছেন সেসবের মধ্যে রয়েছে- এফবিসিসিআই, বিজিএমআইএ, বিটিএম-এর সাবেক সহ-সভাপতি এবং করোগেটেড কার্টুন ম্যানুফ্যাকচার্স সমিতির সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন-এর বর্তমান সভাপতি।
শিক্ষার প্রতি বিশেষ অনুরাগের বহি:প্রকাশ হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ঢাকাতে – ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এবং অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। সন্দ্বীপে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ’ এবং পিতামাতার নামে ‘সেকান্দার-সাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা’। এসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য তিনি। ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি:-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি।
ইয়ুথ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল কাসেম হায়দার। ব্যবসা-বানিজ্যের পাশাপাশি অনেক সৃজনশীল কাজের সাথে যুক্ত। বাংলা একাডেমি ও এশিয়াটিক সোসাইটির আজীবন সদস্য। প্রতিষ্ঠা করেছেন সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ‘লেখালেখি’। সেখান থেকে নিয়মিত বিভিন্ন লেখকের গ্রন্থ প্রকাশ হচ্ছে। বইমেলায় নিজস্ব স্টল থাকছে নিয়মিত।
কর্ম, গুণ, দেশপ্রেম, দৃপ্ত, সুস্থ চিন্তার মানুষেরা একটি দেশের জাতীয় সম্পদ। আবুল কাসেম হায়দার তেমনি একজন মানুষ।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের একটি দ্বীপাঞ্চলের নাম সন্দ্বীপ। প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ সমুদ্রঘেরা সওদাগরের জাহাজ নোঙরের অঞ্চল চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানার উত্তর মগধরা গ্রামে ১৯৫৪ সালের ১লা এপ্রিল এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন নিজস্ব আলোয় আলোকিত, উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব আবুল কাসেম হায়দার। তার পিতা মরহুম মৌলভী সেকান্দর হোসেন ছিলেন সন্দ্বীপের একজন বিশিষ্ট দানবীর, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তার মমতাময়ী মায়ের নাম মরহুমা সাফিয়া খাতুন।
ছোটবেলা থেকেই আবুল কাসেম হায়দার শান্ত. ধীর, মিতব্যায়ী এবং মেধাবী ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানার সাউথ সন্দ্বীপ হাই স্কুল থেকে ৫ বিষয়ে লেটার সহ ১ম বিভাগে এসএসসি, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ৩ বিষয়ে লেটার সহ এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে সম্মান ডিগ্রী লাভের পর একই বিভাগ থেকে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ২০০৮ সালে আমেরিকার এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভলপমেন্ট বিষয়ের উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
মহান পেশা শিক্ষকতা। ব্যবসায়ী না হলে হয়তো তিনি শিক্ষকতাকেই বেছে নিতেন। শিক্ষার জন্য তিনি বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। প্রতিষ্ঠিত করেছেন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, ইউনিভার্সিটি। তারপরেও তিনি সময় বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা প্রশাসন বিভাগে বিভিন্ন ব্যাংক ট্রেনিং ইনিষ্টিটিউটে গেস্ট লেকচারার হিসাবে লেকচার দিয়ে থাকেন।
সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে আবুল কাসেম হায়দার একজন নিবেদিতপ্রাণ। সাহিত্য-সংস্কৃতির যেমন তিনি নিজে করেন অন্যকেও উৎসাহিত করেন। সাহিত্যের বিকাশে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রকাশনা সংস্থা। সেখান থেকে তিনি দেশের গুণী লেখকদের বই প্রকাশ করে চলেছেন। জড়িত আছেন সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক অনেক সংগঠনের সাথে। বিটিভি, এনটিভি, চ্যানেল আই ও এটিএন বাংলা প্রভৃতিসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ব্যবসা ও অর্থনীতি বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ। ১৯৯১ সাল থেকে বিটিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অন্যতম আলোচক হিসাবে অংশগ্রহণ। ফুলকুঁড়ি, আবাবিল,পুবের হাওয়া সহ বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক।
আবুল কাসেম হায়দার ইয়ুথ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ছোট আকারে কয়েকজন সমমনা মানুষদের নিয়ে শুরু হয়েছিলো ইয়ুথ গ্রুপের যাত্রা। আস্থা এবং সততার সাথে চলে ইয়ুথ গ্রুপ আজ বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রুপ নিয়েছে। ইয়ুথ গ্রুপের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে – ইয়ুথ স্পিনিং মিলস লিঃ, চৌধুরী এ্যাপারেল (প্রাঃ) লিঃ,ইয়ূথ প্রপাটিজ লিঃ, ইয়ূথ রিয়েল ষ্টেট লিঃ, ইয়ূথ হেচারী এন্ড এগ্রো লিঃ, ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিঃ,ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল,গুলশান, ঢাকা।
দেশের একজন সফল শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী হিসেবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনসমুহে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আবুল কাসেম হায়দার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এখনও অনেক ব্যবসায়ী সংগঠনসমুহে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। যে সমস্ত সংগঠনে বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে সাবেক সহ-সভাপতি এফবিসিসিআই (২০০৩ – ২০০৫) এবং বিজিএমইএ (১৯৯৭ – ১৯৯৮)। সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান – বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) (১৯৯৮-২০০২০), এসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি’স অব বাংলাদেশ (২০০৫- ২০১৪), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) (১৯৯৮-২০০২)। প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিএসটিএমইএ)। সাবেক পরিচালক বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিঃ (২০০৩ – ২০০৭)।
আবুল কাসেম হায়দার দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে যুক্ত আছেন। তার মধ্যে – নির্বাচিত সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (২০০৩ – ২০০৬ ), সার্ক চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (২০০৩-২০০৫), রিভিউ প্যানেল, সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিকাল ইউনিট (সিপিটিইউ), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার (২০০৪-২০০৮),এ স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর হায়ার এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০০৬-২০১৬ অব কোয়ালিটি গ্রুপ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার।
তিনি বাংলাদেশ করোগেটেড কার্টুন এন্ড এক্সেসরিজ ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিসিএএমইএ) ১৯৯৬-১৯৯৮, সন্দ্বীপ সমিতি, ঢাকা (২০০৩ – ২০০৪)-এরসাবেক সভাপতি।
চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা (২০০৪- ২০০৮), সন্দ্বীপ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম লি.ঢাকা-এর সন্মানিত উপদেষ্টা আবুল কাসেম হায়দার।
লেখালেখির প্রতি অসীম আকর্ষন আবুল কাসেম হায়দারের। প্রায় চারদশক ধরে তিনি দেশের বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে প্রবন্ধ-নিবন্ধ-কলাম লিখে আসছেন। প্রতিবছরই বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় নিয়মিতভাবে তাঁর বই প্রকাশ হয়ে আসছে। নিজে ‘লেখালেখি’ শিরোনামে একটি প্রকাশনাও দিয়েছেন। বহুমুখী লেখালেখির দুর্নিবার আকর্ষন থেকেই তিনি সংবাদপত্র প্রকাশে উদ্যোগী হোন। তাঁর প্রকাশনায় এবং সম্পাদনায় সংবাদপত্রের মধ্যে রয়েছে: দৈনিক আজকের আওয়াজ, সাপ্তাহিক প্যানোরমা।
‘লেখালেখি’ নামে একটি সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা জনাব আবুল কাসেম হায়দার গঠন করেছেন ২০০৮ সালে। বিগত বছরগুলোতে বাংলা একাডেমী বইমেলায় অংশগ্রহনসহ দু’শতাধিক বই প্রকাশনা নিয়ে দেশের সৃজনশীল সাহিত্য বিকাশে অবদান রাখছেন। উল্লেখযোগ্য কয়েকজন লেখক যেমন নির্মলেন্দু গুণ, আল মাহমুদ, রাহাত খান,এমাজউদ্দীন আহমদ, কবীর চৌধুরী, সেলিনা হোসেন, বিপ্রদাস বড়–য়া, আলী ইমাম,আসাদ চৌধুরী, সৈয়দ আবুল মকসুদ, নাসরীন জাহান ,মঞ্জু সরকারসহ অনেক সৃজনশীল লেখকের লেখা বই এই সৃজনশীল প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
লেখক-সাহিত্যিকদের প্রতি সন্মানপ্রদর্শন এবং তাদের জাতীয়ভাবে মুল্যায়নের জন্য নিজের প্রকাশনা সংস্থা ‘লেখালেখি’ থেকে ‘লেখালেখি সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন ২০১৩ সালে। প্রতি বছর একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিককে ৫০ হাজার টাকা নগদ এবং একটি ক্রেষ্ট প্রদানের মাধ্যমে লেখালেখি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আবুল কাসেম হায়দার একজন সুলেখক। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিকে শিল্প উৎপাদন, বিকাশ ও সমস্যা স¤পর্কে লেখা প্রকাশিত হয়। সমসাময়িক রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, শিল্প বানিজ্যসহ নানারকম লেখা তিনি লিখে আসছেন প্রায় চার দশক ধরে। সেসব লেখা সংকলিত করে তিনি গ্রন্থ প্রণয়নও করেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় চল্লিশটি। একজন সজ্জন, সংবেদনশীল, সচেতন লেখক হিসেবে পাঠক মহলে তিনি সমাদৃত।
আবুল কাসেম হায়দার রচিত গ্রন্থে সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিল্প-বানিজ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত অনেক লেখা স্থান পেয়েছে। লেখাগুলোর কোথাও কোথাও লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত হলেও তা সার্বজনীন মানুষের কথা হয়ে উঠেছে। সহজ ভাষায় তিনি বর্ণনা করেন প্রেক্ষাপটগুলোকে। এখানেই লেখকের বড় সার্থকতা বলে মনে করি।
আবুল কাসেম হায়দারের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪০-এর অধিক। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো:বাংলাদেশের শিল্প: সমস্যা ও সম্ভাবনা, শিল্পায়ন ও উন্নয়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত, বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা উৎপাদন বিপনন: বস্ত্রশিল্প প্রেক্ষিত, শিল্পবানিজ্য ও শিল্পচিন্তা, ট্রা›সশিপমেন্ট ট্রানজিট করিডোর, বাংলাদেশের উন্নয়নের ইতিহাস: নওয়াব সলীমুল্লাহ থেকে খালেদা জিয়া, বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় নীতিমালা, দেশনায়ক শহীদ জিয়া, গ্যাস নিয়ে বিতর্ক: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত, এশিয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি, সন্দ্বীপের শত ব্যক্তিত্ব ( সম্পাদিত), Business Administration: Import Export Manual, Investment, Management Production & Marketing: Bangladesh Perspective, সাহাবুদ্দীনের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ, ব্যবসা সংস্থাপন : আমদানী রপ্তানী ম্যানুয়েল, বাংলাদেশের শিল্পখাত: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ, জবধফুসধফব Readymade Garments: The First Step of Industrial Revolution in Bangladesh, শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি অর্জন ও বাংলাদেশের অবস্থান, বাংলাদেশের শিল্পখাত: দুই দশকের পরিবর্তন, জোট সরকারের শাসন উন্নয়ন অগ্রগতি, অর্থনীতি রাজনীতি বাংলাদেশ প্রেক্ষিত, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য বিনিয়োগ দুর্নীতি, শিক্ষা অর্থনীতি সংস্কার, এসএমই বিজেনেস ম্যানুয়েল, সমাজ শিক্ষা অর্থনীতি ,স্বাধীনতার কবি শামসুর রাহমান (সম্পাদিত), স্বপ্নের সম্ভাবনা, এভারেষ্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিম (সম্পাদিত), গ্যাস বিদ্যুৎ বাণিজ্য ইত্যাদি।, আগামীর বাংলাদেশ, অর্থনৈতিক বিপ্লবের পথে বাংলাদেশ, হুমায়ূন আহমদকে যেমন দেখেছি (সম্পাদিত), তৈরি পোশাক শিল্প উনয়নের প্রর্তীক, সামগ্রীক অর্থনীতি এগ্রিয়ে, রুপকল্প -২০২১, রুপকল্প -২০২১ ভিশন ২০৩০, বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০, একটি নক্ষত্রের বিদায়, বাংলাদেশ এর অর্থনীতি করোনা প্রেক্ষিত এবং মনীষী ভাবনা।
নিজের অর্জিত গুণের স্বীকৃতিস্বরূপ আবুল কাসেম হায়দার দেশের সন্মানজনক সংগঠনসমুহে যুক্ত হয়েছেন। যে সমস্ত সংগঠন সমুহে আজীবন সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছেন তার তার মধ্যে রয়েছে – রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা, বাংলা একাডেমী,ঢাকা, সন্দ্বীপ সমিতি,ঢাকা, সন্দ্বীপ এডুকেশন সোসাইটি, চট্টগ্রাম, ধানমন্ডি রিক্রেয়েশন ক্লাব, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইট, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, নজরুল ইনস্টিটিউট, ইডাপস, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ, ঢা:বি:, মৃত্তিকা বিজ্ঞান ট্রাস্ট, ঢা :বি :, সিএনসি (সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার),গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ এন্ড ঈদগা সোসাইটি, ঢাকা,নিকেতন সোসাইটি, গুলশান,ঢাকা।
আবুল কাসেম হায়দার সমাজসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন। তিনি সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশন ও ইয়ুথ ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান। ইয়ুথ ফাউন্ডেশন থেকে বারডেম (ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাসপাতাল)- এ বাংলাদেশের প্রথম কিডনি-লিভার ট্রান্সপারেন্ট প্লান্ট ‘ইয়ুথ ফাইন্ডেশন লিভার এন্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিট অব ড্যাব’ চালু করেন। সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সন্দীপে একমাত্র মহিলা কলেজ আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ এবং সেকান্দর সাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও সন্দ্বীপের অনেক স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, অনুদান, সাহায্য, ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি প্রদানসহ অন্যান্য সমাজ কল্যাণম‚লক কার্যক্রম করে যাচ্ছেন। সামাজিক কার্যক্রমে অবদান রাখার জন্য তিনি অনেক প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্যপদ লাভ করেছেন। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই নয় ব্যক্তিগতভাবেও তিনি বেকারত্ব, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। তার কাছে ভালো কাজের জন্য সহযোগীতা চেয়ে কেউ কখনো খালি হাতে ফিরে আসেননি।
তিনি ‘সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশন’-এর চেয়ারম্যান।
সন্দ্বীপ পাবলিক হাই স্কুল, সন্দ্বীপ,চট্টগ্রাম, সাউথ সন্দ্বীপ কলেজ, সন্দ্বীপ,চট্টগ্রাম এবং রহমতপুর হাই স্কুল, সন্দ্বীপ,চট্টগ্রাম-এরপ্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
আবুল কাসেম হায়দার অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। সেসবের মধ্যে রয়েছে – আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ, সন্দ্বীপ, হারামিয়া,চট্টগ্রাম, সেকান্দর সাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, সন্দ্বীপ,উত্তর মগধরা,চট্টগ্রাম। উত্তর মগধরা বায়তুল আমান জামে মসজিদ, সন্দ্বীপ, উত্তর মগধরা,চট্টগ্রাম। পুর্ব হারামিয়া গোলাম মোস্তফা প্রাথমিক বিদ্যালয় সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম। আবুল কাসেম হায়দার এবতেদায়ী মাদ্রাসা, মুছাপুর, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম। আবুল কাসেম হায়দার ভোকেশনাল, জুনিয়র হাই স্কুল ও পলিটেকনিক্যাল কলেজ (প্রস্তাবিত),মগধরা ,সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম। আবুল কাসেম হায়দার নুরানী মাদ্রাসা, দীর্ঘাপাড়, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম,কালাপানিয়া মক্তব (প্রস্তাবিত) সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম। মাইট ভাংগা পাঠাগার (প্রস্তাবিত) সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম। সওদাগরহাট আবুল কাসেম হায়দার জামে মসজিদ, সারিকাইত, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম। বায়তুন-নূর আবুল কাসেম হায়দার জামে মসজিদ, মাইটভাংগা, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম।
বিগত ১৮ বৎসর যাবৎ ইয়ুথ ফাউন্ডেশন এবং সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ৩টি কলেজ, ২৮টি হাই স্কুল,৬টি মাদ্রাসা ও বহু ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করে আসছেন।‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’ এক লক্ষ টাকা করে ফিক্সড ডিপোজিট এর লভ্যাংশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অনার্স এ সবচেয়ে ভাল ফলাফল অর্জনকারী একজন শিক্ষার্থীকে এ বৃত্তি দেয়া হয়।
এ ছাড়াও দক্ষিণ সন্দ্বীপ কলেজ, উত্তর সন্দ্বীপ কলেজ পাবলিক হাইস্কুল ,পূর্ব সন্দ্বীপ হাই স্কুল, এ ওয়াই এম ছায়েদুল হক ফাউন্ডেশন সন্দ্বীপ, চট্টগ্রামে ১ লক্ষ টাকা মূল্যের আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি নামে সর্ব মোট ৮টি বৃত্তি চালু রয়েছে।
সন্দ্বীপ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম লি. ২ লক্ষ টাকার ছাত্র বৃত্তি চালুর প্রস্তাব।
আবুল কাসেম হায়দার কর্তৃক ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’ প্রবর্তন করেছেন তিনি। সেসবের মধ্যে আছে – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে ‘আবুল কাসেম হায়দার’ শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, ইষ্টার্ন ইউনর্ভাসিটি,ঢাকা ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, সাউথ সন্দ্বীপ কলেজ,সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, উত্তর সন্দ্বীপ কলেজ,সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, পূর্ব সন্দ্বীপ হাই স্কুল,সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, সন্দ্বীপ পাবলিক হাইস্কুল,সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’, এ.ওয়াই. এম ছায়েদুল হক ফাউন্ডেশন,সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’ সন্দ্বীপ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম লি. ঢাকা ( প্রস্তাবিত) ‘আবুল কাসেম হায়দার শিক্ষা উন্নয়ন বৃত্তি’। এশিয়াটিক সোসাইটি ট্রাস্ট( প্রস্তাবিত) গঠন।
হারামিয়া ২০ শষ্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম এবং ইয়ুথ ফাউন্ডেশন লিভার এন্ড কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিট অব ড্যাব” শাহবাগ, ঢাকা’র প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা।
নিজের কাজের স্বীকৃতিসরূপ দেশের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং সাহিত্য সংগঠন থেকে পেয়েছেন সন্মাননা। সন্মাননার মধ্যে রয়েছে – পালক এ্যাওয়ার্ড ১৯৯৮, বিজয় পদক ১৯৯৪, সিআইপি পদক ১৯৯৮, স্বদেশ সাং¯কৃতিক স্বর্ণপদক ১৯৯৮, সিফসা পদক ১৯৮৯, মহানগরী সাংস্কৃতিক পদক ২০০০, নন্দিনী সাহিত্য পদক ২০০০, অতীশ দীপঙ্কর পদক ২০০১, দেশনেত্রী পদক ২০০১, জিয়া স্মৃতি স্বর্ণপদক ২০০১, স্বাধীনতা ফোরাম পদক ২০০২, দেওয়ান আজরফ শান্তি পদক ২০০৩, কবি ফররুখ পদক ২০০৩, কলি সাহিত্য ও সমাজকল্যাণ সংঘ স্বাধীনতা পদক ২০০৪, নাট্যসভা পুরস্কার ২০০৫, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সম্মাননা ২০০৬, পূর্ণিমা বাসর পদক ২০০৬, টেক্সটাইল বার্তা পদক-২০১৫, সৈয়দ আলী আহসান সিএনসি পদক ২০২১।
আবুল কাসেম হায়দার বিভিন্ন উপলক্ষ্যে পৃথিবীর বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন। বিশ্বের বহু দেশে ব্যবসা বানিজ্য বিষয়ক বহু সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহন করেছেন। তিনি একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। যে সমস্ত দেশে তিনি গিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে -যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, অষ্টেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, কাতার, ইরান, ইরাক, আরব আমিরাত, সৌদিআরব, জার্মান, চীন, কাশ্মীর, দক্ষিণ কোরিয়া,ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার,সুইজারল্যান্ড ,জর্ডান পাকিস্তান, ভারত সহ বিশ্বের অনেক দেশ।
ব্যক্তিজীবনে সদা হাস্যোজ্জ্বল অমায়িক, ভদ্র, পরিশ্রমী আবুল কাসেম হায়দারের স্ত্রী, এক ছেলে নাহিদ মুশফিক জাওয়াদ ও দুই মেয়ে দিলশাদ সারাওয়াত এবং সামিন সারাওয়াতকে নিয়ে সুখী পরিবার। তার স্ত্রী জনাবা আফরোজা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (অনার্স), এমএ ডিগ্রী লাভ করেন।